ছয় ঋতুর নাম বাংলা ও ইংরেজিতে- বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ বা বার মাসে ছয়টি ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, অস্ট্রোলিয়া ছয়টি ঋতু বিদ্যমান। প্রতিটি ঋতু দুই মাস পর পর তার নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে আগমন করে এবং দুই মাস পর ঋতুর অনাবিল সৌন্দর্য উপহার দিয়ে বিদায় নেয় । ছয় ঋতুর প্রতিটি ঋতুর ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য ও রং থাকে।মূলত মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঋতুর আর্বিভাব ঘটে এবং তা পরিবর্তিত হয়।তাপমাত্রা,বায়ুপ্রবাহ ও বৃষ্টিপাতের তারতম্যের কারণে প্রতিটি ঋতু একটি থেকে অন্যটি পৃথক। ঋতুর এই বৈচিত্রময় সৌন্দর্য প্রকাশ মানব জীবনে ব্যাপক ভাবে প্রভাব বিস্তার করে । চলুন আজকে জানব ছয় ঋতুর নাম বাংলা ও ইংরেজিতে -
বাংলা ছয় ঋতুর নাম:
অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে গঠিত বাংলা ছয় ঋতুর নাম গুলো কি কি চলুন দেখে নেই ।
- গ্রীষ্ম
- বর্ষা
- শরৎ
- হেমন্ত
- শীত
- বসন্ত
ইংরেজিতে ছয় ঋতুর নাম :
উপরে আমরা দেখলাম বাংলা ছয় ঋতুর নাম । এবার চলুন দেখে নেই ইংরেজিতে ছয় ঋতুর নাম গুলো ।
বাংলা যে মাসগুলি নিয়ে ছয় ঋতু গঠিত
প্রতিটি ঋতু দুই মাস পর পর বদল হয় অথবা দুই মাস নিয়ে একটি ঋতুর আর্বিভাব হয়। চলুন দেখে নেই বাংলা কোন মাস নিয়ে কোন ঋতুর আর্বিভাব হয় ।
ইংরেজি যে মাসগুলি নিয়ে ছয় ঋতু গঠিত:
উপরের আমরা দেখলাম বাংলা কোন মাস গুলো নিয়ে ছয় ঋতু গঠিত। এবার দেখবো ইংরেজি কোন মাস গুলি নিয়ে ছয় ঋতু গঠিত।
ছয় ঋতুর নাম বাংলা মাস ও ইংরেজী মাস :
ছয় ঋতুর নাম ও কোন ঋতুতে বাংলা কি মাস থাকে এবং ইংরেজিতে কি মাস থাকে তা তুলে ধরা হলো
ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য :
ছয় ঋতুর এই রূপময় সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য বাংলাদেশের চিরকালের গর্বের বিষয়।বাংলাদেশে ছাড়া ভারত ও অস্ট্রোলিয়া ছয় ঋতু বিদ্যমান। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে দুটি বা তিনটি ঋতু দেখা যায় তবে কিছু কিছু দেশে চারটি ঋতু দেখা যায়। চলুন দেখে নেই ছয় ঋতুগুলোর বৈশিষ্ট্য
গ্রীষ্মকাল:
বাংলা বৈশাখ ও জৈষ্ট্য মাস নিয়ে এবং ইংরেজী মধ্য এপ্রিল হতে মধ্য জুন মাস নিয়ে গ্রীষ্মকাল হয় । গ্রীষ্ম ঋতুতে প্রখর রোদ ও তাপে খাল, বিল মাঠ ঘাট ফেঁটে চৌচির হয়ে যায়। প্রচন্ডে গরমে জনজীবন হয়ে উঠে অতিষ্ঠ। মাঝে মাঝে কালবৈশাখী ঝড় সংগঠিত হয় । তবে এই ঋতুকে মধুমাস বলা হয় কারণ -আম, কাঠাল , জাম , জামরুল, আনারস, লিচু প্রভৃতি ফল পাওয়া যায় ।
বর্ষাকাল :
বাংলা আষাঢ়-শ্রাবণ ও ইংরেজিতে মধ্য জুন হতে মধ্য আগস্ট এই দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল। বর্ষাকাল ঋতুতে আকাশ প্রায়ই মেঘলা থাকে এবং মুশল ধারে বৃষ্টিপাত হয়। অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে নদী নালা সবকিছু পানিতে ভরে যায় এবং গাছপালা গুলো সতেজ হয়ে ওঠে। চারিদিকে এক মনোরম সবুজ প্রকৃতির সৃষ্টি হয়।
শরৎকাল :
বর্ষার ঋতুর পর আসে শরৎকাল ঋতু। ভাদ্র-আশ্বিন ও মধ্য আগস্ট হতে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত শরৎকাল বলা হয়। শরৎ ঋতুতে নীল আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায় এবং প্রকৃতি যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যে সেজে উঠে। শরৎ ঋতুর রূপের তুলনা কোন ঋতুর সাথে করা যায় না। তাছাড়া এই ঋতুর আবহাওয়া মনোরম থাকে। প্রচন্ড শীত ও প্রচন্ড গরম কোনেটাই এই ঋতুতে থাকে না।
হেমন্তকাল :
শরৎকালের পর আসে হেমন্তকাল। কার্তিক-অগ্রহায়ণ এবং মধ্য অক্টোবর হতে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত হেমন্তকাল বলা হয় । হেমন্ত ঋতু মানেই পাকা ধানের ঋতু ।
পাকা ধান বা ধান কাটা কে কেন্দ্র সূচনা হয় নবান্ন উৎসব । ফলে কৃষকের ঘরে ঘের পিঠা পায়েসের খাওয়ার ধুম পড়ে যায় । তাছাড়া হেমন্ত কালের শেষে শুরু হয় শীতকাল তাই হেমন্ত কালকে শীতের পূর্বাভাস বলা হয়।
শীতকাল :
পৌষ-মাঘ ও মধ্য ডিসেম্বর হতে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বলা হয় শীতকাল। উত্তর দিক থেকে হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার চাদরে মোরা হাড় হিম করা ঠান্ডা নিয়ে শুরু হয় শীতকাল। শীতকালে খেজুড়ের রস এবং বিভিন্ন ধরনের নিত্য নতুন শাকসবজি পালংশাক, লালশাক, বরবটি, শিম, টমটো, আলু, মূলা, ওলকপি, বাধাকপি, ফুলকপি , মটরশুটি প্রচুর পরিমানের পাওয়া যায়। তাছাড়া বিভিন্ন রকমের ফুল গাঁদা ডালিয়া, সূর্যমুখী, গোলাপ ইত্যাদি রং বেরঙের ফুল দেখা যায়।
বসন্তকাল :
শীতকাল পরে আসে বসন্তকাল। ফাল্গুন-চৈত্র এবং মধ্য ফেব্রুয়ারী হতে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত বসন্তকাল বলা হয়। বসন্ত ঋতুতে মানব মনে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয় । মন মাতানো দক্ষিনা বাতাসা এবং সেই বাতাসে নিষ্পত্র গাছে নতুন নতুন পাতা গজায়। তাছাড়া আম গাছে মুকুলে মুকুলে ভরে উঠে, পলাশ, অশোক,ডালিম শিমুল, ও কৃষ্ণচূড়ার ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় চারিদিক। বসন্তের আগমনে দক্ষিনা বাতাসের সাথে কোকিলের কুহুতান ডাক মানব মনকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়।
আরোও পড়ুন : বাংলা বারো মাসের নাম
FAQ :
প্রশ্ন- বাংলাদেশে মোট কয়টি ঋতু?
উত্তর : ছয়টি ঋতু
প্রশ্ন : কয় মাস পর পর ঋতু বদল হয় ?
উত্তর : দুই মাস পর পর ঋতু বদল হয়
প্রশ্ন : ছয়টি ঋতু কি কি ?
উত্তর : গ্রীষ্মকাল,বর্ষাকাল,শরৎকাল,হেমন্তকাল,শীতকাল,বসন্তকাল
প্রশ্ন : বিশ্বে কয়টি দেশে ছয়টি ঋতু বিদ্যামান ?
উত্তর : বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রোলিয়া
প্রশ্ন : গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় কয়টি ঋতু থাকে ?
উত্তর : দুইটি
প্রশ্ন : গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় ঋতু দুইটি কি কি ?
উত্তর : বর্ষাকাল এবং শুষ্ককাল
প্রশ্ন : শীতপ্রধান এলাকায় কয়টি ঋতু থাকে ?
উত্তর : দুইটি ঋতু
প্রশ্ন : শীতপ্রধান এলাকায় দুইটি ঋতু কি কি?
উত্তর : পোলার ডে (বসন্ত ও গ্রীষ্ম) এবং পোলার নাইট (শরৎ ও শীত)
সর্বশেষ : এই পোস্টে আমি শেয়ার করলাম বাংলা ছয় ঋতুর নাম বা ইংরেজিতে ছয় ঋতুর নাম গুলো। তাছাড়া বাংলা ছয় ঋতুর নাম ছাড়াও কোন মাসে কোন ঋতু থাকে এবং ইংরেজিতে কোন মাসে কোন ঋতু তা উল্লেখ করা হলো। আশাকরি বাংলা ছয় ঋতুর নাম সর্ম্পকে জানার আগ্রহ থাকলে অবশ্যই পোস্টটি ঋতু গুলো সর্ম্পকে জানতে আপনাদের সহায়তা করতে পারে। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ